কোয়েল পাখির ডিম প্রতিদিন কয়টা খাওয়া যায়? না জানলে ক্ষতি হবে
কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে জানলে অবাক হবেন কোয়েল পাখি ডিম নিয়মিত একটি খেলে শরীর থেকে যাবতীয় রোগ বালাই দূর হবে। তবে যদি আপনার না জানেন কোয়েল পাখি ডিম প্রতিদিন কয়টা খাওয়া যায় তাহলে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন অতিরিক্ত কোয়েল পাখি ডিম খাওয়ার পরে হার্ট এটাকসহ বিভিন্ন গুরুতর রোগ তৈরি হবে।
তাই আজকের এই আর্টিকেলে কোয়েল পাখি ডিম প্রতিদিন কয়টা খাওয়া যায় এবং কোয়েল পাখি ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব যারা কোয়েল পাখি ডিম খেতে খুব ভালোবাসেন তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি গুরুত্বপূর্ণ।
কোয়েল পাখির ডিম প্রতিদিন কয়টা খাওয়া যায়
কোয়েল পাখির ডিম প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ টা খাওয়া যাবে।কোয়েল পাখির ডিম পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে। কোয়েল পাখির ডিম মুরগির ডিম এবং হাঁসের ডিমের তুলনায় আকারে ছোট হলেও এর উপকারিতা এবং গুণাগুণ অনেক বেশি। কোয়েল পাখির ডিম থেকে ভরপুর প্রোটিন ফসফরাস ম্যাগনেসিয়াম সোডিয়াম আয়রন ক্যালসিয়াম সহ ভিটামিন বি১,
বি২, বি৩ বি৫, বি৭, বি ৬, বি৯ এবং বি১২ পাওয়া যায়।
তাই প্রতিদিন অতিরিক্ত কোয়েল পাখি ডিম খাওয়া যাবেনা যদি না জেনে অতিরিক্ত কোয়েল পাখি ডিম খাওয়া হয় তাহলে হার্ট অ্যাটাক সহ হার্টের চর্বি বাধবে এবং আরো বিভিন্ন প্রকার রোগ তৈরি হবে। অতিরিক্ত কোয়েল পাখির ডিম খেতে থাকলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়বে।
- ১৮ বছরের নিচে কিশোর ১ দিনে সর্বোচ্চ ৪টি কোয়েল পাখি ডিম খেতে পারবে।
- পনের বছরের নিচে বাচ্চারা একদিনে সর্বোচ্চ দুইটি কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারবে।
- প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বয়স ২৫ কিংবা ৩০ এর ওপরে হলে একদিনে সর্বোচ্চ ৫টি থেকে ৬টি কোয়েল পাখি ডিম খেতে পারবে।
- বৃদ্ধ বয়স্ক ব্যক্তি একদিনে সর্বোচ্চ ৬টি কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারবে।
কোয়েল পাখির ডিম মুরগির ডিম এর তুলনায় আকারে ছোট হলেও একটি মুরগির ডিম এর থেকে কোয়েল পাখি ডিমের বেশি পরিমাণ প্রোটিন পাওয়া যায়। কোয়েল পাখির ডিম থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও প্রোটিন পাওয়া যায় এই উপাদান গুলোর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
কোয়েল পাখির ডিম থেকে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স পাওয়া যায় এটি ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করে ত্বককে সুন্দর করে ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে বাড়ায়। চলুন আমরা দেখে আসি কোয়েল পাখির ডিমের পুষ্টিগুণ উপাদান গুলো কি কি।
কোয়েল পাখির ডিমের পুষ্টিগুণ উপাদান
কোয়েল পাখির ডিম থেকে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ উপাদান পাওয়া যায় এই প্রতিটি উপাদান স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। যেমন কোয়েল পাখির ডিম থেকে পটাশিয়াম পাওয়া যায় এটি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়। কোয়েল পাখির ডিম থেকে প্রোটিন পাওয়া যায় যা শরীর থেকে প্রোটিনের অভাব পূরণ করে। ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করে। কোয়েল পাখির ডিম থেকে আরও অন্যান্য যে সকল পুষ্টিগুণ উপাদান পাওয়া যায় যেমন:
- ম্যাগনেসিয়াম
- পটাশিয়াম
- ফসফরাস
- আয়রন
- ভিটামিন এ
- ফ্যাট
- প্রোটিন
- সোডিয়াম
- ভিটামিন সি
- ভিটামিন ই
- ভিটামিন ডি
- ভিটামিন কে
- সেলেনিয়াম
- ভিটামিন বি১ /থিয়ামিন
- ভিটামিন বি১/রাইবোফ্লাভিন
- ভিটামিন বি৩/নিয়াসিন
- ভিটামিন বি৫/প্যান্থানিক এসিড
- ভিটামিন বি৬/পিরিডক্সিন
- ভিটামিন বি৭/বায়োটিন
- ভিটামিন বি৯/ফোলেট
- ভিটামিন বি১২
- জিংক মেঙ্গানিজ
- কপার
- ক্লোরাইড
- আয়োডিন
- অ্যামাইনো এসিড
- সেচুরেটেড ফ্যাট
- আন সেচুরেটেড ফ্যাট
- কোলেস্টেরল
- চিনি
- ফাইবার
- মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
- প্রোটিন
- ক্যারোটিনয়েডস
- রেটিনল
- টাইকোপেন
কোয়েল পাখির ডিম থেকে শরীরের প্রয়োজনীয় সমস্ত ভিটামিন ও খনিজ উপাদান পাওয়া যায় তাই নিয়মিত সকালে দুই থেকে তিনটি কোয়েল পাখি ডিম খেতে হবে এদের শরীর থেকে যাবতীয় পুষ্টি ও ভিটামিন এর অভাব পূরণ হবে এবং শরীর পুষ্টিগুনে ভরপুর থাকবে। আশা করছি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন কোয়েল পাখির ডিমের পুষ্টি গুণ উপাদান সম্পর্কে এবার চলুন দেখে আসি কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা।
কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
বিজ্ঞানীরা বলেন প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই দুই থেকে তিনটি কোয়েল পাখি ডিম খেতে হবে। কোয়েল পাখি ডিম থেকে ভরপুর ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান পাওয়া যায় মুরগির ডিমের তুলনায় সবচেয়ে বেশি পরিমাণ কোয়েল পাখির ডিম থেকে পাওয়া যায়। বিজ্ঞানীরা বলেন একটি কোয়েল পাখির ডিম থেকে পাঁচটি মুরগির ডিমের সমান প্রোটিন পাওয়া যায়।
তাই কোয়েল পাখি ডিমের আকার দেখবেন না, বরং এর পুষ্টিগুণ দেখবেন। কোয়েল পাখির ডিম ঔষধি গুনাগুন সম্পন্ন খাবার। কোয়েল পাখির ডিম এর খনিজ উপাদান এবং ভিটামিন সম্পর্কে জানলে আশ্চর্য হবেন উপরে কোয়েল পাখি ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে দেওয়া রয়েছে। প্রতিদিন সকালে একটি কোয়েল পাখি ডিম খেলে সারা জীবনের জন্য ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস পাবে। নিচে দেখুন কোয়েল পাখি ডিমের উপকারিতা দেওয়া রয়েছে।
কোয়েল পাখির ডিম খেলে ত্বক কোমল থাকে: কোয়েল পাখির ডিম থেকে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স পাওয়া যায় ভিটামিন সি পাওয়া যায় যা ত্বকের জন্য উপকারী এবং কোয়েল পাখির ডিমের সাদা অংশ থেকে প্রচুর পরিমাণে লাইসিন 8 নামক এক ধরনের অ্যামাইনো এসিড পাওয়া যায় এটি ত্বক থেকে রিংকেল দূর করে তাকে উৎপন্ন করে এবং ত্বককে কোমল ও উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
কোয়েল পাখির ডিম খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকে: কোয়েল পাখির ডিম থেকে গ্লুকোজ পাওয়া যায় এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এছাড়াও কোয়েল পাখি ডিম কে প্রোটিনের উৎস বলা হয় এটি শরীরে পেশে নির্মাণ করে এবং মেটাবলিজমকে আরো উন্নত করে।
শরীরে মেটাবলিজমকে উন্নত থাকলে ইনসুলিন প্রতিক্রিয়া আরো শক্তিশালী হবে এতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে এছাড়াও কোয়েল পাখি ডিম থেকে ভরপুর ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন বি ১২ পাওয়া যায় এটির শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
কোয়েল পাখির ডিম খেলে হার্ট অ্যাটাক এর ঝুঁকি কমে: কোয়েল পাখির ডিম থেকে উচ্চমানের পটাশিয়াম পাওয়া যায়। পটাশিয়াম হার্ট এর জন্য উপকারী এটি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায় এবং হার্ট থেকে সোডিয়াম এর পরিমাণ কমাতে শুরু করে। নিয়মিত সকালে একটি অথবা দুইটি কোয়েল পাখি ডিম খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে যাবে এবং হার্ট এর কার্যকারিতা আরো বাড়বে।
কোয়েল পাখি ডিম খেলে শরীরে উচ্চমানের প্রোটিন সরবরাহ হয়: কোয়েল পাখির ডিম থেকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায় বিজ্ঞানীরা বলেন একটি ছোট কোয়েল পাখি ডিম থেকে পাঁচটি মুরগির ডিমের সমান প্রোটিন পাওয়া যায় অর্থাৎ দিনে দুইটি কোয়েল পাখির ডিম খেলে দশটি মুরগির ডিমের উপকারিতা পাওয়া যাচ্ছে। কোয়েল পাখির ডিম আকারে ছোট হলেও নিয়মিত একটি কোয়েল পাখি ডিম খেলে শরীরে উচ্চমানের প্রোটিন সরবরাহ হবে।
আরো পড়ুন: ফ্রি লটারি খেলে taka ইনকাম
কোয়েল পাখির ডিম খেলে হাড় ও পেশী শক্ত হয়: কোয়েল পাখির ডিম থেকে ভরপুর ভিটামিন ডি পাওয়া যায় যা হারকে শক্ত করতে সাহায্য করে এবং শরীরে ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দেয়। ক্যালসিয়াম এর অভাবে হাড় ও পেশী ভঙ্গুর হয়ে পড়ে এবং হাড় ও পেশীতে প্রচুর ব্যথা অনুভূত হয় তাই নিয়মিত সকালে একটি কোয়েল পাখি ডিম খেলে জয়েন্টে কিংবা গিরায় ব্যথা দূর হবে।
কোয়েল পাখির ডিম খেলে শরীরে ডিএনএ উৎপন্ন হয়: কোয়েল পাখির ডিম থেকে ফোলেট পাওয়া যায় এটি শরীরে কোষ এবং ডিএনএ উৎপাদন করতে সাহায্য করে। ফোলেট ডিএনএ সংশ্লেষণ করতে সাহায্য করে এবং এটি নতুন নতুন কোষের জন্ম দেয়। প্রজনন এবং কোষ বিভাজনের ক্ষেত্রে ডিএনএ খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই নিজের প্রজনন ক্ষমতাকে আরো উন্নত করতে নিয়মিত সকালে একটি কোয়েল পাখির ডিম খেতে হবে।
কোয়েল পাখির ডিম খেলে ওজন কমে: কোয়েল পাখির ডিম খেলে ওজন কমতে পারে বিজ্ঞানীরা বলেন কোয়েল পাখির ডিম থেকে খুব কম পরিমাণে ক্যালরি পাওয়া যায় এবং একটি কোয়েল পাখি ডিম খেলে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পেট ভারী অনুভূত হয় এতে ক্ষুধার হার কমে যাবে এবং ওজন কমতে শুরু করবে।
কোয়েল পাখির ডিম খেলে স্নায়ুতন্ত্র এর কার্যকারিতা বাড়ে: কোয়েল পাখির ডিম খেলে স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়ি কোয়েল পাখির ডিম থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি৬ এবং ট্রিপটফান পাওয়া যায়। এটি স্নায়ুতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে আরো উন্নত করে।
কোয়েল পাখির ডিম খেলে অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ হয়: কোয়েল পাখির ডিম থেকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায় এটি রক্তস্বল্পতাকে দূর করে এবং অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে। শরীরে রক্তের অভাব দেখা দিলে কিংবা রক্তস্বল্পতা হলে একে অ্যানিমিয়া বলা হয়। তাই অ্যানিমিয়া দূর করতে আয়রন সম্পন্ন খাবার খেতে হবে যেমন কোয়েল পাখি ডিম থেকে ভরপুর আয়রন পাওয়া যায়। তাই কোয়েল পাখি ডিম খেলে অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ হয়।
কোয়েল পাখির ডিম খেলে দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয়: কোয়েল পাখির ডিম থেকে প্রচুর ভিটামিন এ পাওয়া যায় যা চোখের জন্য উপকারী এবং চোখের দৃষ্টি শক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে। আশ্চর্য ভাবে চোখের দৃষ্টি শক্তিকে ভালো করতে কোয়েল পাখি ডিম বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই নিয়মিত সকালে একটি কোয়েল পাখির ডিম খেলে আপনার দৃষ্টি শক্তি উন্নত হবে।
কোয়েল পাখির ডিম খেলে হজম ক্ষমতা বাড়ে: কোয়েল পাখির ডিম থেকে প্রচুর ফাইবার পাওয়া যায়। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে হজম শক্তি বাড়ে এবং যেকোনো খাবার দ্রুত হজম হয় হজম শক্তিতে গন্ডগোল দেখা দিলে পেট ফেঁপে থাকে পেটে গ্যাস তৈরি হয়। এইজন্য নিয়মিত সকালে একটি কোয়েল পাখি ডিমের দ্রুত হজম ক্ষমতা বাড়বে।
কোয়েল পাখির ডিম খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধ হয়: কোয়েল পাখির ডিম খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধ হয় কোয়েল পাখি ডিম থেকে কিছু এন্টি অক্সিডেন্ট পাওয়া যায় যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে কোয়েল পাখির ডিমের প্রচুর ভিটামিন ই এবং সেলেনিয়াম পাওয়া যায়। এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যার শরীরকে ফ্রি মেডিকেল থেকে রক্ষা করে এবং আনসারের ঝুঁকি কমায়।
কোয়েল পাখির ডিম খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে: কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী বিজ্ঞানীরা বলেন কোয়েল পাখির ডিম ওষুধের তুলনায় বেশি উপকারী। কোয়েল পাখির ডিম খেলে দ্রুত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে শুরু করবে এবং শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে সঠিক রাখবে।
আশা করছি উপরের আলোচনার মাধ্যমে আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন কোয়েল পাখি ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে। কোয়েল পাখি ডিম খাওয়ার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারিতা এ নিয়মিত একটি অথবা দুইটি কোয়েল পাখির ডিম খেতে হবে। পরিপূর্ণ উপকারিতা পেতে একদিনে সর্বোচ্চ কোয়েল পাখির ডিম পাঁচটি থেকে ছয়টি খেতে পারবেন।
কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার নিয়ম
উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আশা করছি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন প্রতিদিন কয়টা কোয়েল পাখির ডিম খেতে হবে এবং প্রাপ্তবয়স্ক ও কিশোর কিশোরীরা প্রতিদিনের কয়টা কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে তুলনায় অতিরিক্ত কোয়েল পাখির ডিম খেলে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে যেমন হার্টের সমস্যা কিডনির সমস্যা ইত্যাদি।
কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই কিন্তু কোয়েল পাখির ডিম হাফ বয়েল খেলে সবচেয়ে বেশি উপকারিতা পাওয়া যাবে। যেকোনো ডিম যেমন মুরগির ডিম কিংবা হাসের ডিম হাফ বয়েল খেলে সবচেয়ে বেশি উপকারিতা পাওয়া যায়।
হাফ বয়েল ডিম এর কুশন থেকে প্রোটিন পাওয়া যায় যখন ডিম তেলে ভাজা হয় তখন এর পুষ্টিগুণ গুলো নষ্ট হয় কিন্তু ডিম হাফ বয়েল করে খেলে খুব কম পরিমাণ পুষ্টি নষ্ট হয় এবং পরিপূর্ণ উপকারিতা পাওয়া যায়।
কোয়েল পাখির ডিম সিদ্ধ করার জন্য একটি পত্রের মধ্যে অল্প পরিমাণে পান নিতে হবে। তারপর দুইটি অথবা তিনটি ডিম সে পানির মধ্যে দিয়ে পাঁচ থেকে ছয় মিনিট পর্যন্ত চুলায় রাখতে হবে। দিনটি সিদ্ধ হয়ে আসলে চুলা বন্ধ করে দিতে হবে এবার ডিমের ওপরের খোসাটি ফেলে দিতে হবে। খোসা ফেলে ডিম সরাসরি খেতে পারবেন।
অনেকেই ডিমের সাথে হালকা লবণ খেতে ভালোবাসে কিন্তু এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোয়েল পাখি ডিম থেকে উচ্চ পরিমাণে কোলেস্টেরল পাওয়া যায় পাশাপাশি যদি লবণ দেওয়া হয় তাহলে এটি হার্ট এর জন্য ক্ষতিকর হবে। তাই লবণ এবং ঝাল ছাড়াই শুধুমাত্র কোয়েল পাখি ডিম হালকা সিদ্ধ করে খোসা ফেলে দিয়ে খেতে হবে এতে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।
কোয়েল পাখির ডিম কখন খেতে হবে
কোয়েল পাখির ডিম সকালে এবং রাতে ঘুমানোর পূর্বে খেলে সবচেয়ে বেশি উপকারিতা পাওয়া যাবে। কোয়েল পাখির ডিম নিঃসন্দেহে একটি উপকারী খাবার অন্যান্য ডিম যেমন মুরগি ডিম এবং হাসির ডিমের তুলনায় সবচেয়ে বেশি পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায় তাই। প্রতিদিন সকালে ব্রেকফাস্ট এর সাথে দুইটি থেকে তিনটি কোয়েল পাখি ডিম খেতে হবে তাহলে সারাদিন শরীরে প্রচুর এনার্জি উৎপন্ন হবে এবং তাপ উৎপন্ন হবে।
গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখি ডিমের উপকারিতা
গর্ভকালীন এই সময়টি প্রতিটি মেয়ের জন্য খুবই স্পেশাল এবং গুরুত্বপূর্ণ এই সময় যে কোন খাবার খাবার পূর্বে যথেষ্ট চিন্তা ভাবনার সাথে খেতে হবে কারণ যে কোন একটি ভুল সিদ্ধান্ত বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখি ডিম অতিরিক্ত খেলে স্বাস্থ্যের এত ক্ষতি হতে পারে তাই গর্ভকালীন সময়ে প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই থেকে তিনটি কোয়েল পাখি ডিম খেতে হবে।
গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা অনেক নিয়মিত কোয়েল পাখির ডিম খেলে বাচ্চার স্বাস্থ্য উন্নত হবে দ্রুত বাচ্চা বুদ্ধি বিকাশ হবে এবং মায়ের শরীরের শক্তি ও তাপ উৎপন্ন হবে বিশেষ করে এখন তো শীতকাল শীতকালে প্রতিদিন দুইটি কোয়েল পাখির ডিম খেলে সারাদিন শরীরে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হবে এতে ঠান্ডা কম লাগবে।
গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খেলে শরীরে প্রোটিন সরবরাহ হবে। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত দুইটি কোয়েল পাখির ডিম খানের মায়ের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং শিশুর স্বাস্থ্য বজায় থাকবে।
গর্ভকালীন সময়ে কোয়েল পাখির ডিম খেলে শিশুর দ্রুত ব্রেইন তৈরি হবে।
- গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খুবই উপকারী এটি শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করবে এবং দ্রুত বাচ্চার স্বাস্থ্য গঠনে ভূমিকা পালন করবে।
- কোয়েল পাখির ডিম থেকে প্রচুর সেলেনিয়াম এবং জিংক থাকে এটি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- নিয়মিত কোয়েল পাখির ডিম খেলে গর্ভাবস্থায় মাড়ির সংক্রমণ প্রতিরোধ হবে।
- গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খেলে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকবে।
- গর্ভাবস্থায় নিয়মিত কোয়েল পাখির ডিম খেলে দ্রুত বাচ্চার হাড় ও পেশী মজবুত হবে।
- কোয়েল পাখির ডিম গর্ভবস্থায় খুবই উপকারী নিয়মিত সকালে দুইটি কোয়েল পাখির ডিম খেলে গর্ভকালীন সময়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খেলে ত্বক সুন্দর থাকবে এবং শরীরে প্রোটিন ও খনিজ পদার্থ সরবরাহ হবে।
- কোয়েল পাখির ডিম খেলে গর্ভকালীন সময়ে মায়ের শরীরে প্রাণশক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং ক্লান্তিবোধ ও কমবে।
গর্ভকালীন সময়ে কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া খুবই উপকারী তবে অতিরিক্ত কোয়েল পাখি ডিম খেলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে তাই প্রতিদিন সকালে গর্ভকালীন সময়ে দুইটি কোয়েল পাখি ডিম খেতে হবে। কোয়েল পাখির ডিম থেকে উচ্চমানের ভিটামিন এবং খনিজ পাওয়া যায়। আশা করছি সকলে বুঝতে পেরেছেন গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে এবার চলুন দেখে আসি কোয়েল পাখি ডিমের ক্ষতিকর দিক।
কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক
কোয়েল পাখির ডিম পুষ্টিগুণে ভরপুর বিজ্ঞানীরা বলেন নিয়মিত কোয়েল পাখি ডিম খেলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যাবে তবে অতিরিক্ত কোয়েল পাখির ডিম খেলে কিছু ক্ষতি হতে পারে। যেমন অতিরিক্ত কোয়েল পাখির ডিম
খাওয়ার ফলের হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়বে এবং হার্ট এটাক হবে। কোয়েল পাখির ডিম থেকে উচ্চ মাত্রায় কোলেস্টেরল পাওয়া যায় এই অতিরিক্ত কোলেস্টেরল হার্টের জমবে এবং হার্টে তেলের পরিমাণকে অনেক বাড়িয়ে দিবে। হার্টের চর্বির পরিমাণ অনেক বেড়ে গেলে হার্ট ব্লক হয়ে যেতে পারে এতে হার্ট অ্যাটাক হবে।
অতিরিক্ত কোয়েল পাখির ডিম খেলে হজম শক্তি সমস্যা দেখা দিবে। কোয়েল পাখির ডিম থেকে প্রচুর ফাইবার পাওয়া যায় যা হজম শক্তির জন্য ভালো কিন্তু অতিরিক্ত কোয়েল পাখির ডিম খেলে হজম শক্তিতে গন্ডগোল তৈরি হবে এবং গ্যাসের সমস্যা দেখা দেবে।
- অতিরিক্ত কোয়েল পাখির ডিম খেলে এলার্জির সমস্যা তৈরি হবে। কোয়েল পাখির ডিম থেকে কিছু প্রোটিন পাওয়া যায় এটি অ্যালার্জির সৃষ্টি করে।
- কোয়েল পাখির ডিম খেলে ওজন বৃদ্ধি পাবে। অতিরিক্ত পরিমাণে কোয়েল পাখির ডিম খেলে ওজন বাড়তে পারে।
- কোয়েল পাখির ডিম থেকে প্রোটিন পাওয়া যায় উচ্চমাত্রায় কোয়েল পাখির ডিম খেলে কিডনিতে সমস্যা তৈরি হবে।
- কোয়েল পাখির ডিম থেকে প্রচুর সোডিয়াম পাওয়া যায়। অতিরিক্ত পরিমাণে কোয়েল পাখির ডিম খেলে উচ্চ রক্তচাপ তৈরি হবে।
কোয়েল পাখি ডিম স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও যখন অতিরিক্ত পরিমাণে কোয়েল পাখি ডিম খাওয়া শুরু করবেন তখন ওপরের এই ক্ষতিকর দিক গুলো দেখা দিবে। এইজন্য বিজ্ঞানীরা বলেন কোন খাবারই অতিরিক্ত খাওয়া ভালো নয় যেকোনো খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে খেলেই এর পরিপূর্ণ উপকারিতা লাভ করা সম্ভব। এবার চলুন তাড়াতাড়ি দেখে আসি কোয়েল পাখির ডিমের দাম কত।
কোয়েল পাখির ডিমের দাম কত
মুরগির ডিম এর তুলনায় কোয়েল পাখির ডিমের দাম বেশি একটি মুরগির ডিমের দাম 10 টাকা বাজারে কোয়েল পাখির ডিমের দাম ১৬ টাকা পিচ। বাজারে একটি কোয়েল পাখির ডিমের দাম ১৬ টাকা। পাইকারি বাজারে কোয়েল পাখির ডিমের দাম আরো কম হতে পারে। তবে যে কোন লোকাল বাজারে একটি কোয়েল পাখি ডিম শুধু টাকা পিস বিক্রি করা হয়।
যদি সে কোয়েল পাখি ডিমটি সিদ্ধ করে বিক্রি করা হয় তাহলে দাম নেওয়া হয় ২০ টাকা। কোয়েল পাখির ডিমের উপর হালকা বিট লবণ ছিটিয়ে খেলে এর স্বাদ অনেক বেড়ে যায়। আশা করছি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন কোয়েল পাখির ডিমের দাম কত। পাইকারি বাজারে কোয়েল পাখির ডিমের দাম ১৪ টাকা পিচ।
কোয়েল পাখির ডিমে কি এলার্জি আছে
কোয়েল পাখির ডিমের কিছু প্রোটিন রয়েছে যা শরীরে এলার্জি উৎপন্ন করে। অতিরিক্ত কোয়েল পাখি ডিম খেলে শরীরে অ্যালার্জি উৎপন্ন হয় তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে কোয়েল পাখি ডিম খেতে হবে। অতিরিক্ত কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার পরে শরীরে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তবে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে কয় পাখির ডিম খেলে এলার্জি হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। কিছু মানুষের শরীরে খাবারে এলার্জি থাকে সেক্ষেত্রে সঠিক তথ্য পেতে প্রথমে একবার কোয়েল পাখি ডিম খেয়ে দেখতে হবে যদি অ্যালার্জি কোন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে পরবর্তী থেকে কোয়েল পাখি ডিম খাওয়া দিতে হবে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আজকের এই প্রতিবেদনে কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার নিয়ম, কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক এবং কোয়েল পাখির ডিমের দাম কত সেই সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম যারা কোয়েল পাখির ডিম খেতে ভালোবাসেন। তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার ফলে বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর উপকারিতা পাওয়া সম্ভব।
কোয়েল পাখির ডিম থেকে পাঁচটি মুরগির ডিমের সময় প্রোটিন পাওয়া যায় যা শরীরে প্রোটিনের অভাবকে পূরণ করতে পারে। কোয়েল পাখির ডিম খেলে ওজন কমে এছাড়াও কোয়েল পাখির ডিম থেকে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। নিয়মিত আন্টি অক্সিডেন্ট সম্পন্ন খাবার খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধ হয়।
ড্রিমার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url